আইপিএস - ইউপিএস - ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার - কুকার - শর্ট সার্কিট কি
আইপিএস - ইউপিএস - ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার - কুকার - শর্ট সার্কিট কি
আইপিএস/হোম ইউপিএস/ইপিএস-এর কাজ:
আইপিএস (IPS) পূর্ণ অর্থ Instant Power Supply. মূল বিদ্যুৎ সাপ্লাই বন্ধ হলে তাৎক্ষনিকভাবে এ উৎস-এর মাধ্যমে লোডে বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেয়া হয়। ইহাতে স্বায়ংক্রিয় সুইচ থাকে যার কন্ট্যাক্ট এর পরিবর্তনে লোড বিদ্যুৎ সাপ্লাই পায়।
আইপিএস-এর প্রধান অংশ দুইটি।
(ক) সঞ্চয়ী ব্যাটারি এবং
(খ) ইলেকট্রনিক কন্ট্রোলার সার্কিট।
ইউপিএস :
ইউপিএস (UPS) শব্দের পূর্ণরূপ Uninteruptable Power Supply বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো প্রকার বিঘ্ন না ঘটিয়ে বা নিবরচ্ছিন্ন ভাবে এ ডিভাইজ এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যায় । এ ডিভাইস থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যায় বলে এ ডিভাইসকে ব্যাক আপ ডিভাইসও বলা হয় ।
আইপিএস - ইউপিএস - ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার - কুকার - শর্ট সার্কিট কি
ইউপিএস সিস্টেমের প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ
(ক) একটি রেকটিফায়ার এবং থাইরেস্টর নিয়ন্ত্রিত ব্যাটারি বার্জার যা এসি ইনপুটকে রেগুলেডে ডিসিতে রূপান্তর করে ব্যাটারিকে চার্জ দেয়।
(খ) একটি ব্যাটারি থাকে থাকে যা এসি বিদ্যুৎ সাপ্লাই বন্ধ হলে ইনভার্টারে ডিসি সাপ্লাই দেয়।
(গ) একটি ইনভার্টার থাকে যা ব্যাটারির ডিসিকে এসিতে রূপান্তর করে লোডে সরবরাহ দেয় ।
এ ডিভাইসের মাধ্যমে এসি সাপ্লাইকে ডিসি রূপান্তর করে ব্যাটারিতে বিদ্যুৎ সঞ্চিত রাখা হয়। সাপ্লাই বিদ্যুৎ সরাসরি ব্যবহার না করে ব্যাটারিতে সঞ্চয়ের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় বলে কোনো প্রকার বিঘ্ন ছাড়াই বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেয়। এর ক্ষমতাকে ব্যাক আপ পাওয়ার ক্যাপাসিটি বলা হয়। ইহার এ ব্যাক আপ পাওয়ার নির্ভর করে মূলত ব্যাটারির ক্যাপাসিটির উপর । ইউপিএস-এর ব্যাক আপ পাওয়ার ১৫ মিনিট অর্থ এটির উপযোগী যে যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত সে যন্ত্রে মূল বিদ্যুৎ উৎস বন্ধ হলে ১৫ মিনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে সক্ষম। কম্পিউটার পরিচালনায় ইউপিএস ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
অন্য পোষ্ট : generator watt meter | Electrical energy | Power factor
ইউপিএস-এর কাজ বাস্তব ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক কন্ট্রোলার সার্কিট ইনভার্টার ও কনভার্টার উভয় কাজই করে এবং একই ইউনিটের মধ্যে থাকে। এটি এসি সাপ্লাইকে পূর্ণ ডিসিতে রূপান্তর করে ব্যাটারি চার্জ করে বিদ্যুৎ জমা রাখার কাজ করে । মূল বিদ্যুৎ উৎস বন্ধ হলে স্বায়ংক্রিয় সুইচের পরিবর্তনে ব্যাটারিতে জমাকৃত বা সঞ্চিত বিদ্যুৎ পুনরায় এসিতে রূপান্তর করে লোডে সাপ্লাই দেয়।
সিস্টেম আইপিএস সংযোগ থাকা অবস্থায় মূল বিদ্যুৎ সাপ্লাই সরাসরি লোডে কাজ করে এবং একই সাথে
আইপিএস-এর ব্যাটারি চার্জও হয়। এর ক্ষমতা মূলত ব্যাটারির ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। এর রেটিং ওয়াট,
কিলোওয়াট বা কেভিএ-তে লেখা হয়। আজকাল আইপিএস ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাসা-বাড়িতে ফ্যান, লাইট, টিভি, কম্পিউটার চালাতে এবং অফিস কার্যক্রমে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য আইপিএস ব্যবহৃত হয়। আইপিএসকে হোম ইউপিএস বা ইপিএসও বলা হয়।
আইপিএস - ইউপিএস - ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার - কুকার - শর্ট সার্কিট কি
ডোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার :
সার্কিটে লোড বাড়ানোর বা কমানোর কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য সার্কিটে বা সিএেম অনবরত ভোল্টেজ এর ওঠানামা ঘটে, যা ইলেকট্রনিক সার্কিটের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যে যন্ত্রের সাহায্যে ভোল্টেজের এ ওঠানামা বন্ধ করা যায় এবং যা ভোল্টেজের এর মান প্রায় স্থির করে রাখতে সক্ষম তাকে ভোল্টেজ স্ট্রাবিলাইজার বলে।
অধিক সেনসেটিভ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি চালাতে সর্বদা সঠিক পরিমাণ ভোল্টেজ প্রয়োজন হয়। ভোল্টেজ স্থির রাখার জন্য স্বয়ংক্রিয় যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা হয়, তাকে ভোল্টেক স্ট্যাবিলাইজার বলে।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সাধারণ ত্রুটি
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সাধারণ ত্রুটির তালিকা:
বাসা বাড়ী, অফিস-আদালত, কলকারখানা, দোকানপাট ইত্যাদি স্থানে দৈনন্দিন ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি বা ফল্ট দেখা দেয়। এসব যন্ত্রপাতিতে সাধারণত তিন ধরনের ত্রুটি দেখা দেয়। ত্রুটিগুরো হলো
১। ওপেন সার্কিট ত্রুটি,
২। শর্ট সার্কিট ত্রুটি
৩। গ্রাউন্ড বা আর্থ ত্রুটি।
আইপিএস - ইউপিএস - ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার - কুকার - শর্ট সার্কিট কি
শর্ট সার্কিট ত্রুটির লক্ষণ:
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির হিটিং এলিমেন্ট বা কারেন্টবাহি পরিবাহীর অংশ বিশেষ একত্র হওয়া বা সাপ্লাই কর্ডের ফেজ ও নিউট্রাল একত্র হওয়াকে শর্ট সার্কিট বলে। শর্ট সার্কিট হলে কারেন্ট প্রবাহের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়। এমনকি বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এই ত্রুটির লক্ষণগুলো নিম্নরূপ
১. সুইচ অন করার সাথে সাথেই ফিউজ পুড়ে যায় অথবা সার্কিট ব্রেকার পড়ে যায়।
২. হিটিং এলিমেন্ট এর অংশ বিশেষ শর্ট হয়ে থাকলে তা কাজ করবে না বা প্রয়োজনীয় তাপ উৎপন্ন করবে না।
৩. প্যারালালে সংযুক্ত কোনো এলিমেন্ট এর দুইটি টার্মিনাল শর্ট হলে সেটি কাজ করবে না কিন্তু অন্যগুলো কাজ করবে। ফলে প্রয়োজনীয় তাপ উৎপন্ন হবে না।
৪. কারেন্টবাহী কন্ডাক্টর বা হিটিং এলিমেন্টের প্যারালালে সংযুক্ত নির্দেশক বাতির প্রান্তসমূহ শর্ট হলে বাতি জ্বলবে না।
৫. মোটরের কয়েলের মধ্যে শর্ট সার্কিট হলে মোটর গোঁ গোঁ শব্দ করে চলবে এবং অত্যধিক পরিমাণে গরম হবে।
শর্ট সার্কিট ত্রুটি নির্ণয়ের পদ্ধতি: শর্ট সার্কিট ত্রুটি নির্ণয়ের জন্য নিয়ন টেস্টার, টেস্ট ল্যাম্প, এভোমিটার প্রয়োজন।
অন্য পোষ্ট : Avometer | Ammeter | Voltmeter | ভোল্টমিটার | Ohm meter | ওহম মিটার
শর্ট সার্কিট ত্রুটি নির্ণয়ের ধাপ সমূহঃ
১। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই ত্রুটি নির্ণয় করা যায়।
২। সাপ্লাই কর্ড শর্ট হলে এভোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করে এই ত্রুটি নির্ণয় করা যায়।
৩। যন্ত্রের ভিতরে ফেজ-নিউট্রাল শর্ট হয়ে থাকলে সিরিজ টেস্ট ল্যাম্প পরীক্ষা করে এই ত্রুটি নির্ণয় করা যায় ।
ওপেন সার্কিট ত্রুটির লক্ষণ :
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির হিটিং এলিমেন্ট ওপেন, সাপ্লাই কর্ড ওপেন, ফেজ তার বা নিউট্রাল তার ওপেন হলে কারেন্ট প্রবাহিত হয় না এবং যন্ত্র কাজ করে না। যন্ত্রের এরূপ ত্রুটিকে ওপেন সার্কিট ত্রুটি বলে।
এ ত্রুটির লক্ষগুলো নিম্নরূপ
১. হিটিং এলিমেন্ট গরম হবে না।
২. ফিউজ, সাপ্লাই কৰ্ড, ফেজ তার বা নিউট্রাল পুড়ে ওপেন হলে কারেন্ট প্রবাহিত হবে না। ফলে যন্ত্র কাজ করবে না।
৩. সংযোগের কোনো স্থান ওপেন হলে।
ওপেন সার্কিট ত্রুটি নির্ণয়ের পদ্ধতি :
ওপেন সার্কিট ত্রুটি নির্ণয়ে টেস্ট বাড়ি, অ্যাভিামিটার প্রয়োজন হয়। যেভাবে ওপেন সার্কিট ত্রুটি নির্ণয় করা যায় তা হলো
১.ফিউজ খুলে পর্যবেক্ষণের দ্বারা ।
২. মিটার দিয়ে সুইচের কন্ট্যাক্ট পরীক্ষা করে।
৩. মেগার বা অ্যাডোমিটার দিয়ে তারের/কর্ডের কন্টিনিউয়িটি পরীক্ষা করে।
মেগার বা অ্যাভোমিটার বা টেস্ট বাতি দিয়ে খুব সহজেই কন্টিনিউয়িটি পরীক্ষার মাধ্যমে ওপেন সার্কিট ত্রুটি নির্ণয় করা যায়।
আইপিএস - ইউপিএস - ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার - কুকার - শর্ট সার্কিট কি
গ্রাউন্ড ত্রুটির লক্ষণ :
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির হিটিং এলিমেন্ট বা কয়েলের কোনো অংশ বড়িতে লাগলে, ইনসুলেশন নষ্ট হয়ে পরিবাহী তার বড়িতে লাগলে প্রাউন্ড ত্রুটি ঘটে। এতে যন্ত্রের বড়ির স্পর্শে মানুষ বৈদ্যুতিক শক পায়। এ ধরনের ত্রুটিকে গ্রাউন্ড ত্রুটি বলে লক্ষণসমূহ নিম্নরূপ
১. হিটিং.এলিমেন্ট.কয়েল-যন্ত্রের..ধাতব-অংশে-লাগলে
২. টার্মিনাল কানেক্টর ভেঙে সুইচ বা যন্ত্রের বড়িতে লাগলে।
৩. গ্রাউন্ড ত্রুটিতে লিকেজ কারেন্ট প্রবাহে ফিউজ পুড়ে যেতে পারে।
গ্রাউন্ড ত্রুটি নির্ণয়ের পদ্ধতি :
যেগার, টেস্ট বাতি, নিয়ন টেস্টার দিয়ে গ্রাউন্ড ত্রুটি নির্ণয় করা যায়। (ক) টেস্ট বাতির এক প্রান্ত আর্থে এবং অন্য প্রাপ্ত ত্রুটি যুক্ত যন্ত্রের বড়িতে লাগালে বাতি জ্বলবে। যন্ত্রের বড়িতে টেস্টার ধরলে টেস্টারও মিটমিট করে জ্বলবে। এভাবে খুব সহজেই গ্রাউন্ড ত্রুটি নির্ণয় করা যায় ।
অন্য পোষ্ট : তারের জয়েন্ট কত প্রকার - সোল্ডারিং আয়রন - সোল্ডারিং কাকে বলে
বৈদ্যুতিক কুকারের সাধারণ সার্কিট :
নিচে বৈদ্যুতিক কুকারের সাধারণ সার্কিট চিত্র দেখানো হলো। বৈদ্যুতিক কুকারের সাধারণ কার্যপদ্ধতি পরিবর্তনশীল তাপমাত্রায় রান্নার জন্য বৈদ্যুতিক কুকারে সাধারনত রোটারি সুইচ ব্যবহার করা হয়। এ সুইচের কন্ট্যাক্টর লিবার বা হাতলটি দুই বাহু বিশিষ্ট। যখন সুইচ অন করা হয় তখন তা একটি এলিমেন্টকে কেটে দিয়ে অন্য এলিমেন্টের (হাই ওয়াট)-এর সাথে সংযোগ করে দেয়।